বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:করোনা সংক্রমণকে কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। তাই পশ্চিমবাংলায় কনটেনমেন্ট জোনগুলিতে মেয়াদ বাড়ল লকডাউনের। ১৯ জুলাই পর্যন্ত এই মেয়াদ বাড়ানো হল। নবান্ন থেকে এই বিষয়ে একটি নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এদিনও রাজ্যে সংক্রমণের হার ছিল যথেষ্ট বেশি। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ৩৯০ জন। ফলে রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৮৩৮ জন। তবে করোনা ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে ১১ হাজার ৯২৭ জনের শরীরে। এদিন করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। ফলে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮০ জন।
উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি জেলাকে নিয়ে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫২৪ জন। এই সময়ে কলকাতা করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এদিন উত্তর ২৪ পরগনায় ২৯৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৪৩ জন, হাওড়ায় ১১৯ জন এবং হুগলিতে নতুন করে ৩১ জন সংক্রমিত হয়েছেন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনায় ৮ জন, হাওড়ায় ৫ জন। এই সময়ে করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৭১৮ জন। এর মধ্যে কলকাতার ১৯৯ জন রয়েছেন। তবে সুস্থ হওয়ার হার কিছুটা কমেছে। এদিন এই হার ছিল ৬০.৬৯ শতাংশ। তুলনায় কিছুটা আগেই রয়েছে সারা দেশের সুস্থতার হার। জাতীয় সুস্থতার হার এখন ৬৩ শতাংশর বেশি। অথচ এ মাসের শুরুতে রাজ্যে সুস্থ হওয়ার হার প্রায় ৬৭ শতাংশের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল।
এদিকে, সোমবারের মতো মঙ্গলবারও একটি দুঃসংবাদে অনেকের মন ভার হয়ে গিয়েছে। সোমবার হুগলির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায় মাত্র ৩৮ বছর বয়সেই মারা যান করোনায়। আর মঙ্গলবার করোনায় মারা গেলেন ৩৪ বছরের এক শিক্ষিকা। নাম সৌমি সাহা। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। নানা হাসপাতাল ঘুরে শেষে তাঁকে ব্যান্ডেলের ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সোমবার থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। মঙ্গলবার প্রাণ হারান তিনি। শিক্ষিকার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র একমাস আগে লকডাউনের মধ্যেই তাঁর বিয়ে হয়। হুগলির পোলবার স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, করোনায় মৃত হুগলির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়ের গোটা পরিবারই করোনায় সংক্রমিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর স্বামী সংক্রমিত ছিলেন। মঙ্গলবার পরিবারের অন্য সদস্যদের রিপোর্ট আসে। রিপোর্টে শাশুড়ি এবং এমনকী, দেবদত্তা রায়ের চার বছরের সন্তানেরও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সূত্রের খবর, কলকাতা এবং হুগলি জেলার হাসপাতালগুলিতে তাঁদের ভর্তির চেষ্টা করা হয়। তবে আশ্চর্যের কথা হল, কোথাও বেড খালি পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের তরফে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর দেবদত্তা রায়ও কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোথাও ভর্তি হতে পারেননি। শেষে অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে হুগলির শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে মৃত্যু হয় দেবদত্তার।